পিঠা বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে কিন্তু শহরে থেকে ঘরে বানানো পিঠা খাওয়া এখন আর সহজ কাজ নয়। চাইলেই পিঠার উপকরণ হাতের কাছে পাওয়া যায় না। সর্বপরি পিঠা বানাতে যে ধৈর্য বা সাধনার দরকার তাও বা শহরে বাস করা কয়টা পরিবারের আছে! জীবন যাত্রার মান এবং সময়াভাবে শহরে এখন আর পিঠা বানানো হয় না বলেই আমার মনে হয়।
এদিকে না দেখতে দেখতে এবং না খেতে খেতে এখনকার পরিবারগুলোতে শিশুরাও আর পিঠা চায় না বা খায় না! শীতকালে পিঠায় যে স্বাদ থাকে তা আমাদের এই শহুরে শিশুরা আর পাচ্ছেই না ফলে এই শিশুরা বড় হয়ে আর পিঠার প্রতি আগ্রহ দেখায় না। ছোটবেলায় আমরা খাবার খেয়ে থাকি তাই আমাদের সারা জীবন ভালো লাগে।
চলুন আজ গ্রামীন একটা চমৎকার পিঠা আপনাদের দেখিয়ে দেই। হাতে বানানো সেমাই পিঠা, রান্না হয়েছে খেজুরের রসের রাব দিয়ে। এই পিঠা বানানোর পুরা কৃতিত্ব আমার ব্যাটারীই পাবেন, কারন তিনি নিজেই পিঠার সব কিছু যোগাড় করেছেন এবং বানিয়েছেন। আমি সাহস যুগিয়েছি মাত্র! তবে এই পিঠা আমি আমার দাদির হাতে বানানো খেয়েছি, স্বাদ এখনো কিছুটা মনে করতে পারি। তিনি সকালের গাছ থেকে নিয়ে আসা খেজুরের রস দিয়ে এই পিঠা রান্না করতেন এবং আমাদের এক থাল করে দিতেন।
পরিমাণ ও উপকরণ:
হাফ কেজি বা তার কম চালের গুড়া। সামান্য লবণ/পানি (কাই বানাতে যা লাগে), এক লিটার দুধ বা তার কম দুধকে জ্বাল দিয়ে হাফ লিটার বা তার কম করে নিতে হবে। ২/৩টি এলাচি, ২/৩ টুকরা লবঙ্গ, হাফ কাপ নারিকেল কুরানো ও পরিমাণমতো খেজুরের রাব বা গুড়।
প্রস্তুত প্রণালি:
চালের গুড়ায় সামান্য লবণ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে অল্প অল্প কুসুম গরম পানি দিয়ে গুলে গুলে অবশেষে হাত দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে এই কাই বানিয়ে ফেলতে হবে। কাই বানিয়ে পাত্রে রেখে ঢেকে রাখতে হবে। এই কাইটা খুব নরম না, আমার খুব শক্তও হবে না। কাই থেকে ছোট ছোট গোলা করে নিন।
এবার কাইয়ের গোলা কে হাত দিয়ে বেলে মোটা সুতায় রুপান্তরিত করুন। মোটা সুতা থেকে চিকন সুতা (যত চিকন করে ফেলায় যায় ততই স্বাদ বা দেখতে ভালো দেখায়) করে ফেলুন।
এটাই হচ্ছে টেকনিক। কাই সুতার সামান্য চিড়ে হাতের তালু একবার পিছনে এবং আবার সামনে এনে ঘষা দিয়ে কাই সুতার দুই মাথাই চিকন করে ফেলা হয়।
চালুনী দিয়ে চেলে পিঠাগুলোকে আলাদা করে নিতে হবে। তবে এভাবে পিঠা কিছুক্ষণ রেখে দেয়াই ভালো। ঘণ্টাখানেক বা তারও পরে বের করে রান্না করাই উত্তম।
পিঠা বানানো শেষ হয়ে গেলে একটা হাঁড়িতে দুধ গরম করতে থাকুন। দুধে কয়েকটা এলাচি এবং কয়েক টুকরা দারুচিনি দিতে ভুলবেন না। পিঠাসহ এই হচ্ছে যাবতীয় উপকরণ। কুরানো নারিকেল, রাব (আপনারা চাইলে খেজুরের গুড় বা চিনি দিয়েও রান্না করতে পারেন)।
এবার দুধে খেজুরের গুড় দিন। দিতে থাকবেন এবং নাড়াবেন। নারিকেল কুরানো দিয়ে দিন, ভালো করে জ্বাল হয়ে গেলে এবার পিঠা দিয়ে দিন এবং নাড়িয়ে দিন।
এই হচ্ছে ফাইন্যাল প্রোডাক্ট। জিহব্বায় লাগিয়ে মিষ্টি দেখুন, যদি আরো মিষ্টি চান তবে আরো রাব বা গুড় দিতে পারেন। ব্যস, পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। হাতে বানানো সেমাই পিঠার রান্না।
ঠাণ্ডা বা গরম দুভাবেই খাওয়া যেতে পারে। আপনার যেমন ইচ্ছা। রাতে বানিয়ে সকালেও খাওয়া যেতে পারে।
Home » লাইফস্টাইল » খেজুরের গুড়ে হাতে বানানো সেমাই পিঠা
Search
Popular Posts
-
পাশের বাসায় ভাবির সাথে বান্নার অনেক দিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক।গত ১৯ তারিখ রাতে তিনি ভাবির কাছে গেলে এলাকাবাসী তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলে।এসময় পা...
-
আমাদের দেশে প্রচুর পরিমানে কচুর লতি রয়েছে। পানি কচু,মুখি কচু, কচুর লতি, ওলকচু ইত্যাদি। কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন, মিনারেল ও প্রচুর পরি...
-
পিঠা বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে কিন্তু শহরে থেকে ঘরে বানানো পিঠা খাওয়া এখন আর সহজ কাজ নয়। চাইলেই পিঠার উপকরণ হাতের কাছে পাওয়া যায় না...