বেলের ইংরেজিনাম wood apple। এর উপরের অংশ কাঠের মতো শক্ত। এর আকার জাম্বুরার মতো বা এর চেয়ে বড় হতে পারে। বেলের ভিতরে হলুদ ও আঁশযুক্ত হয়। ঋতুর ফলগুলোর মধ্যে বেল অন্যতম। বেল আমাদের সবারই খুবি পরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি ফল। বেল গাছ ভারতের স্থানীয় একটি গাছ। যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার, নেপাল, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, লাউদ, ফিলিপাইন, ফিজি ইত্যাদি দেশে জন্মায়। হিন্দুধর্মালম্বীদের জন্য বেল গাছ পবিত্রতার প্রতিক। বেল গাছ ভগবান শিবের আভাস। বেলে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফসফরাস। বেলে রয়েছে নানা ঔষধীয় গুনাবলি। যা আমাদের দেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বেল পেট ঠান্ডা রাখে। পাহাড় ও সমতল ভূমি উভয় গাছেই বেল গাছ জন্মায়। বেল ফল মসৃণ ও ঘন হয় এবং শক্ত ও কাঠের ন্যায় খোলস থাকে। বেল ফল গাছে পাকতে এগারো মাস সময় লাগে।

প্রতি ১০০ গ্রাম বেলে আছেঃ পানি- ৫৪.৯৬-৬১.৫ গ্রাম। প্রোটিন -১.৮-২.৬২ গ্রাম। স্নেহ পদার্থ -০.২-.৩৯ গ্রাম। শর্করা -২৮.১১-৩১.৮ গ্রাম। কেরোটিন -৫৫মি:গ্রা:। রিবোফ্লাভিন -১.৯৯মি:গ্রা:। এসকরবিক এসিড -৮-৬০ মি:গ্রা:। নিয়াসিন-১.১ মি:গ্রা:। টারটারিক এসিড -২.১১ মি:গ্রা:।
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক বেলের হাজারো গুনাগুণ ও উপকারীতা সম্পর্কে.....
➤ কাচা বেল ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগে ধন্বন্তরী ঔষধ হিসেবে বিবেচিত। দীর্ঘ মেয়াদি আমাশয় ও ডায়রিয়ায় হলে কাচা বেল নিয়মিত খেলে দ্রুত আরোগ্যলাভ সম্ভব।
➤ বেলের শ্বাস পিচ্ছিল বলে এই ফল পাকস্থলীতে উপকারী পরিবেশ সৃষ্টি করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
➤ বেলে আছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার বা আঁশ যা ব্রুণ সারাতে সাহায্য করে।
➤ পাইলসের সমস্যার জন্য নিয়মিত বেলে খেলে উপশম হয়।
➤ জন্ডিসের সমস্যা দেখা দিলে পাকা বেল গোল মরিচের সংগে শরবত করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
➤ শিশুদের কানের ব্যাথা ও ইনফেকশন সারাতে বেল পাতা ও তিলের তেল একসাথে জাল দিয়ে ঐ তেল ড্রপার দিয়ে কানে দিলে ব্যাথা সেরে যায়।
➤ নিয়মিত বেল খেলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার আশংকা কমে যায়।
➤ সর্দি-জর হলে বেল পাতার রস একচামচ খেলে উপকার পাওয়া যায়।

➤ কাচা বেল পুড়িয়ে খেলে পাতলা দাস্থ্য বন্ধ হয়। বদ হজমেও কাজ করে।
➤ অরুচিতে কচি বেল পোড়া খেলে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। হজম শক্তি বৃদ্ধিতেও কাজ করে।
➤ কাচা বেল পোড়া খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
➤ বেল ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
➤ গরমের সময় পরিশ্রম করার পর বেলের শরবত খেলে ক্লান্তি ভাব দূর হয়।
➤ বেলের ভিটামিন সি গৃষ্মকালীন বহুরোগবালাইকে দূরে রাখে।
➤ বেলের ভিটামিন এ চোখের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অংগগুলোর পুষ্টি যোগায়। ফলে চোখের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
➤বেলের পাতার নির্যাস ভেষজগুণ সম্পন্ন যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে।
➤ কচি বেলে টুকরো করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিলে তাকে বেলশুঁঠ বলে। যাদের আলসার আছে তারা বেলশুঁঠের সাথে পরিমানমতো বার্লি মিশিয়ে রান্না করে নিয়মিত খেলে আলসার দ্রুত সেরে যায়।
➤ বেলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি,যা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
➤ বেলের এন্টিঅক্সিডেন্ট গ্যাস্ট্রিক আলাসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে।